amish-1750093454

ইবিএল কার্ডধারীদের বিশেষ সুবিধা দেবে আমিশে

সম্প্রতি ঢাকায় ইবিএলের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও রিটেইল এবং এসএমই ব্যাংকিং প্রধান এম খোরশেদ আনোয়ার এবং আমিশে’র হেড অব বিজনেস মাহমুদুল হাসান একটি গ্রাহক চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন।

চুক্তির আওতায় অভিজাত জুয়েলারি রিটেইলার আমিশে তার আউটলেটগুলোতে ইবিএল কার্ডধারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা দেবে।

অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন ইবিএল এক্টিং হেড অব রিটেইল অ্যালায়েন্স ফারজানা কাদের এবং আমিশে’র হেড অব মার্কেটিং সামিরা নাওরিন প্রমুখ। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি

untitled-11-1750100954

বাতিল হতে পারে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ

অ্যাপার্টমেন্ট বা ফ্ল্যাট কেনা এবং ভবন নির্মাণে অপ্রদর্শিত বা কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল হতে পারে। গত ২ জুন ঘোষিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে আগের চেয়ে বাড়তি কর দিয়ে এসব ক্ষেত্রে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ অব্যাহত রাখার প্রস্তাব করা হয়। তবে এ প্রস্তাব থেকে সরে আসতে পারে সরকার। এ সুবিধা অনৈতিক ও অন্যায্য উল্লেখ করে অনুমোদিত বাজেটে তা বাতিল করার সুপারিশ করেছে টিআইবি, সিপিডিসহ বিভিন্ন সংস্থা।

সূত্র জানায়, গতকাল সোমবার সকালে অর্থ সচিবসহ অর্থ বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রস্তাবিত বাজেট নিয়ে বৈঠক করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। দুপুরে কালো টাকা সাদা করার সুবিধা অব্যাহত রাখা এবং ফ্ল্যাট নিবন্ধন ব্যয় কমানোসহ কিছু দাবিতে অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করে আবাসন ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের একটি প্রতিনিধি দল।

এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খানের উপস্থিতিতে রিহ্যাবের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূঁইয়া, ভাইস প্রেসিডেন্ট আব্দুর রাজ্জাকসহ কার্যনির্বাহী কমিটির ৯ জন সদস্য এতে অংশ নেন। বৈঠকে কিছু যৌক্তিক দাবি পূরণের আশ্বাস দেওয়া হলেও কালো টাকা সাদা করার সুযোগ বাতিল করার ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। ২২ জুন আগামী অর্থবছরের বাজেট অনুমোদন করবে উপদেষ্টা পরিষদ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ সাদা করার সুযোগ বাতিলের বিষয়ে সক্রিয় বিবেচনা করছে সরকার। অর্থ উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। তবে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে এ সুযোগ অব্যাহত রাখার বিষয়ে জোর দাবি জানানো হয়েছে। সরকার সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে যৌক্তিকভাবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

বৈঠকে রিহ্যাবের পক্ষ থেকে বলা হয়, বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে মন্দা অবস্থায় রয়েছে আবাসন খাত। তাই এ খাতে সহজ শর্তে অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালো টাকা বিনিয়োগের সুযোগ রাখা উচিত। অনিচ্ছাকৃতভাবে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ না থাকলে অতীতের মতো দেশের বাইরে পাচার হয়ে যাবে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বলা হয়, জরিমানা দিয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে অপ্রদর্শিত করার সুযোগ আয়কর আইনে রয়েছে। আইনের ১৯-এর বি-ধারা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় তার সম্পত্তি উল্লেখ না করলে শর্তসাপেক্ষে পরবর্তী করবর্ষে তা দেখানোর সুযোগ রয়েছে।

রিহ্যাবের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট লিয়াকত আলী ভূঁইয়া বলেন, সার্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে আবাসন খাত টিকিয়ে রাখতে অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগ অব্যাহত রাখার জোর দাবি জানিয়েছেন তারা। একই সঙ্গে তারা ফ্ল্যাটের প্রথম ক্রেতার ক্ষেত্রে সর্বমোট নিবন্ধন ব্যয় কমিয়ে ৭ শতাংশের পাশাপাশি রেজিস্ট্রেশনের ক্ষেত্রে মূলধনি মুনাফার ওপর কর ৪ শতাংশ করার দাবি জানিয়েছেন। এ ছাড়া জমির মৌজা মূল্য বহাল রাখা, রড, সিমেন্টের কাঁচামাল, রং প্লাস্টিকসহ বিভিন্ন নির্মাণ উপকরণের ওপর অতিরিক্ত কর প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন।

untitled-11-1750101405

দুর্নীতি প্রমাণ করেই জাবেদের পাচার অর্থ ফেরত আনা হবে

আইনিভাবে প্রমাণ করেই যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদসহ অন্যদের পাচার করা সম্পদ ফেরত আনা সম্ভব বলে মনে করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন। তবে এর আগে দুদককে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ওই দেশে পাচার অর্থে সম্পত্তি অর্জনের প্রতিটি পদক্ষেপ প্রমাণ করতে হবে। তার পরই সে দেশের আদালত অর্থ ফেরত দেওয়ার আদেশ দেবেন।

যুক্তরাজ্য সফর শেষে সোমবার এক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন দুদক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও আমি আমাদের কাজে লন্ডন গিয়েছি। সে সময় প্রধান উপদেষ্টার সফরও ছিল। তবে যাঁর যাঁর কর্মসূচি ছিল ভিন্ন। আমাদের কর্মসূচি আগে থেকেই সে দেশটির ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) সঙ্গে ঠিক করা ছিল। এ নিয়ে ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্টিকরাপশন কো-অর্ডিনেশন সেন্টারের (আইএসিসিসি) সঙ্গে আমরা কাজ করছি।

বিভিন্ন দেশে যারা সম্পদ পাচার করেছেন, তাদের প্রাথমিক যে তালিকা আমাদের কাছে আছে, সেটি আদালতের আদেশসহ সংশ্লিষ্ট দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠানের কাছে পাঠিয়েছি। এনসিএ ভালো কাজ করেছে। সাবেক ভূমিমন্ত্রী জাবেদের বেআইনিভাবে উপার্জিত ও পাচার করা অর্থে কেনা প্রচুর সম্পত্তি এনসিএর সহায়তায় জব্দ করা হয়েছে।

যুক্তরাজ্যে ১ হাজার ২৫ কোটি টাকার সম্পত্তি জব্দ
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, সাবেক ভূমিন্ত্রীর ৫৮০টি বাড়ির সন্ধান পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ৩৪৩টি বাড়ি যুক্তরাজ্যে, ২২৮টি সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং ৯টি যুক্তরাষ্ট্রে। ৩৪৩টি বাড়ির আনুমানিক মূল্য ৭৩.১৫ মিলিয়ন পাউন্ড, বাংলাদেশি মুদ্রায় যা প্রায় ১ হাজার ২৫ কোটি টাকা।

আরও ৩৫ কোটি টাকা জব্দ
এ ছাড়া যুক্তরাজ্যের ব্যাংকে জাবেদের ২.৫ মিলিয়ন ডলার জমা আছে, যা দেশীয় মুদ্রায় ৩৫ কোটি টাকা। এ অর্থও জব্দ হয়েছে। ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, বিভিন্ন জায়গায় তাঁর আরও সম্পদ রয়েছে, যেগুলো নিয়ে দুদক কাজ করছে। এসব বিষয়ে বিভিন্ন সংস্থায় সঠিকভাবে কাগজপত্র পাঠানো হলে এ ক্ষেত্রেও সুফল আসবে। জাবেদের পাচার অর্থ উদ্ধারে জাতিসংঘের দুর্নীতিবিরোধী সনদ অনুযায়ী দুদক থেকে মিউচুয়াল লিগ্যাল অ্যাসিস্ট্যান্স রিকুয়েন্ট (এমএলএআর) যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর, সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বেশ কয়েকটি দেশে পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে যুক্তরাজ্য প্রথম সাড়া দিয়েছে। যুক্তরাজ্য সফরকালে আইএসিসিসি ও এনসিএর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। সেখানে বলা যায়, পাচার করা অর্থ উদ্ধার সারাবিশ্বে একটি জটিল বিষয়। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা কম। এই কাজে দুদকের কর্মদক্ষতা বাড়াতে এনসিএ সহায়তা করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। একজন বিশেষজ্ঞ দুদকের সঙ্গে কাজ শুরু করবেন।

অর্থ ফেরত আসবে যুক্তরাজ্যের আদালতের রায়ে
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকও অর্থ উদ্ধারের উদ্যোগ নিয়েছে। গভর্নর নিজে লন্ডন গিয়েছেন এবং তাঁর প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংস্থার সঙ্গে তিনি আলোচনা করেছেন। তবে শেষ পর্যন্ত পাচার হওয়া জব্দ সম্পদ আমরা আনতে পারব কিনা, এটির মধ্যে একটা সূক্ষ্ম রেখা রয়ে গেছে। সেটির জন্য আমাদের সব ধরনের আইনি প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এ ব্যাপারে দেশের আদালত থেকে যেমন আদেশ দেওয়া হবে, তেমনি যুক্তরাজ্যের আদালত যদি আদেশ দেন, তখনই সম্পদ ফেরত আনা যাবে।

লন্ডনে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল যুক্তরাজ্য এবং স্পট লাইট অব করাপশন– এই তিন সংস্থা একযোগে বিটিশ সরকারকে অনুরোধ করেছে পাচার অর্থ বাংলাদেশকে ফেরত দিতে।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংকের বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) একসঙ্গে কাজ করছে। এর মধ্যে মামলাগুলো করা হয় দুদক থেকে। তাই পাচার টাকা ফেরত আনা সম্ভব হবে কি হবে না– এই কাজটি দুদককেই করতে হবে।

যুক্তরাজ্যে আরও যাদের সম্পদ
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, বাকিদের পাচার সম্পদ উদ্ধারেও দুদক কাজ করছে। এর অংশ হিসেবে গতকাল যুক্তরাজ্যে সাবেক ভূমিমন্ত্রীর ভাই রনির সম্পত্তি, বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান চৌধুরীর দুই ছেলে সাফিয়াত সোবহান সানভীর ও সাফওয়ান সোবহানের সম্পত্তি ফেরত চেয়ে দুদক থেকে তথ্য পাঠানো হয়েছে। এর বাইরে পাচারকারীর সঙ্গে আলোচনা করে অর্থ ফেরত আনার চেষ্টাও করা হচ্ছে। তবে দুদক যেসব মামলা করেছে, সেখানে কোনো ধরনের সমঝোতা করা সম্ভব নয়।

অর্থ ফেরত আনার সাফল্য নগণ্য
এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, পাচার অর্থ ফেরত আনার ক্ষেত্রে দুদকের যে সাফল্য রয়েছে, তা খুবই সামান্য, সেটা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। এর পেছনে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় করা হয়েছে, সেটাও বিবেচনায় রাখা দরকার। প্রথমত, দেশের টাকা আরেক দেশে চলে গেলে, সেই দেশ ফেরত দিতে না চাইলে– সে ক্ষেত্রে কিছুই বলার থাকে না। কিন্তু আমরা যদি আইনিভাবে প্রমাণ করতে সক্ষম হই, যদিও এটা মোটেও সহজ কাজ নয়– তার পরও আমরা আশাবাদী। দেশ থেকে যত টাকা পাচার হয়েছে, তার সব টাকা আমরা ফেরত আনতে পারব– আমি সেটা বলতে চাচ্ছি না। আমরা যতটুকু প্রমাণ করতে সক্ষম হব, ততটুকু ফেরত আনার ক্ষেত্রে আশা করা যায়।

দেশের নাগরিক হিসেবেই টিউলিপের বিরুদ্ধে মামলা
ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন বলেন, টিউলিপ সিদ্দিক ইতোমধ্যে দুদকের তিনটি মামলার আসামি। আরেকটি অভিযোগের অনুসন্ধান শেষ পর্যায়ে। তিনি ২০১৩ সালে খামারের মাছ বিক্রি করে ৯ লাখ টাকা আয় করেছেন– এই খবরও এসেছে। এটা নিশ্চই তাঁর আয়কর নথিতে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই তিনি যতই বলুন না কেন তিনি ব্রিটিশ নাগরিক, এ ক্ষেত্রে দুদক যখন কাগজপত্র দেখছে, তাঁকে বাংলাদেশিই মনে হচ্ছে। নিজে সুবিধা নেওয়ার জন্য নিজেকে কখনও ব্রিটিশ, কখনও বাংলাদেশি বলছেন– এটি মোটেও সমীচীন নয়। টিউলিপের বিরুদ্ধে দুদকের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। টিউলিপের ঠিকানায় দুদক থেকে চিঠিপত্র পাঠানো হচ্ছে। রাজউকে প্লট ও গুলশানে ফ্ল্যাট ছাড়াও তার আরও সম্পদের খোঁজ পাওয়া গেছে।

উপদেষ্টার বিরুদ্ধে অভিযোগ পেলেও আমলে নেওয়া হবে
এক প্রশ্নের জবাবে দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদকের আগের অবস্থা আর এখনকার অবস্থা এক নয়। শুধু পিএস, এপিএস নয়, উপদেষ্টার বিরুদ্ধেও সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে দুদক তা আমলে নেবে।

দ্বৈত নাগরিকত্ব বন্ধ হওয়া দরকার
তিনি বলেন, বর্তমানে পাশের দেশে অনেকে অবস্থান করছেন। সেখানে তাদের থাকা-খাওয়ার খরচ লাগছে। এই খরচের টাকাটা দেশ থেকেই যাচ্ছে। সেদিকে দুদক নজর রাখছে। দ্বৈত নাগরিকত্ব অর্থ পাচারের ক্ষেত্রে যথেষ্ট ভূমিকা রাখে। এটি বন্ধ করা গেলে অর্থ পাচার অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।

সাঈদা মুনার ২ হাজার কোটি টাকা পাচার
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, যুক্তরাজ্যের সাবেক হাইকমিশনার সাঈদা মুনা তাসনিম ও তাঁর স্বামী ব্যবসায়ী তৌহিদুল ইসলাম পরস্পর যোগসাজশে জেনারেশন নেক্সট ফ্যাশন লিমিটেডসহ ১২টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান ও নামসর্বস্ব ভুয়া প্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করে বিদেশে পাচার করেছেন।

বতর্মানে যারা বিদেশে অবস্থান করছেন, তারা তাদের দেশের সম্পদ বিক্রি করার চেষ্টা করছেন। এ জন্য তারা অনেককে সম্পত্তির পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিচ্ছেন। এ বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানানো হবে।

 

tyu-1750067851

এনবিআরের অনলাইন সভায় ‘ট্রাম্প’ ‘ইলন মাস্ক’ ‘ডিম ব্যবসায়ী সমিতি’ ‘মায়ের দোয়া স্যানিটারি’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) আয়কর অনুবিভাগের রাজস্ব আহরণ ও অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটেছে। এ সভায় সাধারণত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সরাসরি ও ভার্চুয়ালি যোগ দেওয়ার সুযোগ আছে।

রোববার আয়োজিত সভায় ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম জুমে যোগ দেওয়া আইডিগুলোর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনী ও স্টারলিংকের মালিক ইলন মাস্কের নামে কয়েকজনকে অংশ নিতে দেখা গেছে। এছাড়াও তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি, মায়ের দোয়া স্যানিটারিসহ বিভিন্ন নামে আইডি খুলেও অংশ নিয়েছেন কেউ কেউ। সভা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা চলছে বিভিন্ন মহলে।

এ বিষয়ে এনবিআরের কর্মকর্তাদের কেউ কেউ বলেন, সম্প্রতি এনবিআর বিলুপ্ত করে দুই ভাগে বিভক্ত করে জারি করা অধ্যাদেশ বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ওই বিষয়ে এনবিআরের চেয়ারম্যান কোনো কথা বলেন কিনা তা জানতে ‘ভুয়া’ নামে অংশ নিয়েছেন কেউ কেউ। আবার কর্মকর্তাদের একটা অংশের ধারণা- আন্দোলনকারীরা এনবিআরের চেয়ারম্যানকে অসহযোগিতা করার ঘোষণা দিয়েছিলেন। তাই অনেকেই অংশ নেননি। সেজন্য সভায় বেশি অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা বেশি দেখাতে ভুয়া আইডি খোলা হতে পারে বলেও ধারণা কারও কারও।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে ভেঙে আলাদা করে অধ্যাদেশ জারির পর থেকে ‘এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের’ ব্যানারে আন্দোলনে নামেন সংস্থাটির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। গত ১২ মে আন্দোলন শুরু হওয়ার পর অর্থ মন্ত্রণালয় ২৫ মে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে অধ্যাদেশটি সংশোধনের আশ্বাস দেয়। এরপর আন্দোলন প্রত্যাহার করলেও এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে তাকে অসহযোগিতা করার ঘোষণা দেয় ঐক্য পরিষদ। টানা ১০ দিন ঈদের ছুটির পর রোববার রাজস্ব সভা অনুষ্ঠিত হয়। মাসিক এই সভায় রাজস্ব আহরণের অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়।

সভায় সশরীরে অংশ নেন এনবিআর চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান, কর বিভাগের সদস্য ও কমিশনাররা। বাকি র্কমকর্তারা ভার্চুয়ালি অংশ নেন। এতে কেউ নামে বা কেউ সংশ্লিষ্ট কমিশনারেটের নাম ব্যবহার করে যুক্ত হন। চার শতাধিক অংশগ্রহণকারীর অনেকে ভুয়া নাম ব্যবহার করেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প, ইলন মাস্ক, তেজগাঁও ডিম ব্যবসায়ী সমিতি, মায়ের দোয়া স্যানিটারি, স্যামসাং ও আইফোনের বিভিন্ন মডেলের নাম, বিভিন্ন সালের নাম ও নানা ধরনের সংখ্যা দিয়ে সভায় অংশ নেন অনেকে।

জানা গেছে, এই সভায় অংশ নিতে গত ৪ জুন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের চিঠি দেওয়া হয়েছে এনবিআরের সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদের দপ্তর থেকে। ওই চিঠিতে বলা হয়, আয়কর বিভাগের ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কর্মকৌশল বাস্তবায়ন অগ্রগতি এবং মে মাস পর্যন্ত রাজস্ব আহরণ পরিস্থিতি পর্যালোচনার জন্য সকাল সাড়ে ১০টায় এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে মাসিক রাজস্ব সভা অনুষ্ঠিত হবে। এনবিআরের চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে আয়কর বিভাগের সব সদস্য, কর কমিশনার ও মহাপরিচালকরা উপস্থিত থাকবেন। সভায় আয়কর বিভাগের সব কর কমিশনার ও মহাপরিচালক সশরীরে এবং সব রেঞ্জ কর্মকর্তা ও সার্কেল কর্মকর্তারা ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম জুমে অংশ নেবেন।

আন্দোলনে যুক্ত আছেন এনবিআরের এমন কিছু কর্মকর্তার অভিযোগ, অধ্যাদেশ বাতিলসহ চার দাবিতে আন্দোলন হয়েছিল। চেয়ারম্যানকে অপসারণের দাবিতে এখন তাকে অসহযোগিতা করছেন কর্মকর্তাদের একাংশ। তাই জুমে বেশি উপস্থিতি দেখাতেই এমনটা করা হতে পারে।

এ বিষয়ে এনবিআর সদস্য (কর প্রশাসন ও মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা) জি এম আবুল কালাম কায়কোবাদ সমকালকে বলেন, ‘সভায় অংশ নেওয়ার জন্য ট্রাম্প বা ইলন মাস্ক এমন কাউকে তো চিঠি দেওয়া হয়নি। এ ধরনের সভা প্রতি মাসে হয় এবং এভাবেই হয়। সভায় যাদের অংশ নেওয়ার কথা, তাদেরকেই চিঠি দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে তো কারো কাছে এই চিঠি যাওয়ার কথা নয়। কারা এ ধরনের নাম ব্যবহার করেছেন কিংবা কেন করেছেন সেটি আপনারা খুঁজে বের করতে পারেন।’

জানতে চাইলে এনবিআর চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান সমকালকে বলেন, এটা কেন করা হয়েছে সেটি তার জানা নেই।

সভায় ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মে পর্যন্ত ১১ মাসের আয়কর খাত থেকে রাজস্ব আদায়ের চিত্র তুলে ধরা হয়।

 

9-1750099417

লেনদেনে ২০০ কোটি টাকার বৃত্ত ভেঙেছে

অবশেষে লেনদেন ২০০ কোটি টাকার ঘরে আটকে থাকার বৃত্ত ভাঙল দেশের শেয়ারবাজার। গতকাল সোমবার দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ৪১৭ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে, যা রোববারের তুলনায় ১৫৪ কোটি টাকা বেশি। এর আগে গত এক মাসের ১৯ কর্মদিবসের ১৮ দিনই লেনদেন ২০০ কোটি টাকার ঘরে আটকে ছিল।

মূল বাজার ছাড়াও গতকাল ডিএসইর এসএমই এবং দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইর লেনদেনসহ দেশের শেয়ারবাজারে সর্বমোট ৪৩৭ কোটি ২৮ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছে। এর মধ্যে ডিএসইতে ৪০ কোটি ৫০ লাখ টাকার এবং সিএসইতে ৬ কোটি ৬৭ লাখ টাকার লেনদেন ছিল ব্লকে।

শুধু লেনদেন নয়, এদিন শেয়ারদর ও বাজার মূল্য সূচকেরও উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়েছে। মূল শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৩৬০ কোম্পানির শেয়ারের মধ্যে ২৯২টির দর বেড়েছে, কমেছে ৩৪টির। এ ছাড়া ৩৭ মেয়াদি ফান্ডের মধ্যে ২০টির দর বেড়েছে, কমেছে ২টির।

অধিকাংশ শেয়ারের দর বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স ৫৯ পয়েন্ট বেড়ে ৪৭৮৩ পয়েন্ট ছাড়িয়েছে। গত বছরের ১৫ ডিসেম্বরের পর পয়েন্ট বিবেচনায় এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বৃদ্ধি। মাঝে গত ৭ মে এক দিনে ১৪৯ পয়েন্ট পতনের পরদিন প্রায় ১০০ পয়েন্ট বৃদ্ধি ছিল সর্বোচ্চ বৃদ্ধি।

গতকাল সূচক বৃদ্ধিতে একক কোম্পানি হিসেবে ওয়ালটন হাইটেক, বিএটি বাংলাদেশ, লাফার্জ-হোলসিম, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, রবি, ওরিয়ন ইনফিউশন, গ্রামীণফোন, আইএফআইসি ব্যাংকসহ বেশ কিছু বৃহৎ বাজার মূলধনি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির অবদান ছিল বেশি। একক খাত হিসেবে ব্যাংক খাতের শেয়ারদর বৃদ্ধি সূচকে সাড়ে ১০ পয়েন্ট যোগ করেছে। তবে অন্য সব খাতেরই কম-বেশি অবদান রেখেছে।

লেনদেন বৃদ্ধির তথ্য পর্যালোচনায়ও প্রায় একই তথ্য মিলছে। প্রতিটি খাতেই লেনদেন বেড়েছিল গতকাল। তবে তুলনামূলক বেশি লেনদেন বেড়েছে বীমা, তথ্যপ্রযুক্তি, চামড়া, কাগজ ও ছাপাখানা খাতে। রোববার যেখানে তথ্যপ্রযুক্তি খাতের ১১ কোম্পানির মাত্র সাড়ে ৩ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয়েছিল, গতকাল তা বেড়ে পৌনে ২৮ কোটি টাকায় উন্নীত হয়েছে। অর্থাৎ এ খাতের লেনদেন বেড়েছে সাত গুণ। বীমা খাতের লেনদেন ২১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বেড়ে ৩২ কোটি টাকায় উন্নীত হয়। তবে একক খাত হিসেবে খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের ২১ কোম্পানির মোট ৭৯ কোটি ৫৫ লাখ টাকার লেনদেন গতকাল ছিল সর্বোচ্চ। এ লেনদেন গতকালের ডিএসইর মোট লেনদেনের ১৯ শতাংশ ছিল। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পৌনে ৫৪ কোটি টাকার লেনদেন ছিল ব্যাংক খাতের।

একক কোম্পানি হিসেবে লাভেলোর ৪১ কোটি ৫৭ লাখ টাকার শেয়ার কেনাবেচা ছিল সর্বোচ্চ। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ প্রায় ২০ কোটি টাকার শেয়ার কেনাবেচা হয় ব্র্যাক ব্যাংকের। সাড়ে ১৬ কোটি টাকার লেনদেন নিয়ে এর পরের অবস্থানে ছিল অগ্নি সিস্টেমস।

 

untitled-11-1750099497

ব্যবসার খরচ কমাতে কাজ করার অঙ্গীকার

বাংলাদেশ গার্মেন্ট ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিজিএমইর) নতুন সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাবুর নেতৃত্বাধীন সংগঠনের নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদ দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। দায়িত্ব নিয়ে পোশাক খাতে বিদ্যমান ও আগামীর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা, আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে সব পর্যায়ে ব্যবসার খরচ কমাতে কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন মাহমুদ হাসান খান বাবু।

গতকাল সোমবার রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএ কমপ্লেক্সের নুরুল কাদের অডিটোরিয়ামে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রশাসক আনোয়ার হোসেনের কাছ থেকে দায়িত্ব বুঝে নেন তিনি। এ সময় বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি ফারুক হাসান, রুবানা হকসহ কয়েকজন সাবেক সভাপতি এবং বিপুলসংখ্যক সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সভার শুরুতে কানাডায় সংগঠনটির সাবেক সহসভাপতি আবদুল্লাহ হিল রাকিবের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করা হয়।

বক্তব্যের শুরুতে জুলাই আন্দোলনের যোদ্ধাদের ধন্যবাদ জানিয়ে বিজিএমইএর নবনির্বাচিত সভাপতি বলেন, ‘তাদের কারণে এখন প্রাণ খুলে কথা বলতে পারছি।’

বিজিএমইএকে একটি সেবামুখী সংগঠন হিসেবে গড়ে তোলার অঙ্গীকার করে বলেন, এ জন্য দরকার স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা। তাই বিজিএমইর সেবা নিতে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম করা হবে, যেখানে সেবার আবেদন, তথ্য বা অভিযোগ জমা দেওয়া যাবে।

ব্যবসা খরচ কমাতে নিজের ঘর থেকে কাজ শুরুর ঘোষণা দিয়ে বিজিএমইএর সভাপতি বলেন, আগামী ১ জুলাই থেকে বিজিএমইএর সদস্যের সব সেবা গ্রহণের ফি ২৫ শতাংশ কমবে। পাশাপাশি ব্যবসার অন্যান্য খরচ কমাতেও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর কথা জানান তিনি।

তিনি বলেন, এ খাতের এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোকে বাড়তি সুবিধা প্রদান, কাস্টমস ও ভ্যাট প্রদান সহজ, এলডিসি উত্তরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক যাতে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে আরোপ না হয় এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে আলোচনা করে খেলাপি ঋণের ক্ষেত্রে প্রকৃত ‘এক্সিট প্ল্যান’ পেতে কাজ করবেন বলেও অঙ্গীকার করেন তিনি।

তিনি বলেন, ভিন্ন প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নিলেও নির্বাচন শেষে সবাই এখন শুধু তৈরি পোশাকশিল্পের পরিবার। এটিই এ খাতের মালিক ও সংগঠনের ঐতিহ্য। ঐক্যবদ্ধভাবে বর্তমান ও ভবিষ্যতের সব অভ্যন্তরীণ ও বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা হবে।

মাহমুদ হাসান খান বাবু বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্কারোপ, ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল, উচ্চ ভ্যাট, সুদ ও মূল্যস্ফীতি, মজুরি বৃদ্ধি, জ্বালানি তেলের দর বৃদ্ধি এবং দুর্বল অবকাঠামোসহ নানাবিধ চ্যালেঞ্জ নিয়ে এ খাত চলছে। নতুন করে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতও একটি চ্যালেঞ্জ। তেলের দাম বাড়লে, তার প্রভাব সবকিছুর ওপরই পড়বে। চ্যালেঞ্জিং সময়ে সংগঠনটিকে নেতৃত্ব প্রদান এবং সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন পর্ষদ গঠনের সুযোগ দেওয়ায় প্রশাসক আনোয়ার হোসেনকে ধন্যবাদ জানান তিনি।

বিজিএমইর সাবেক সভাপতি ও বর্তমান পর্ষদের পরিচালক ফারুক হাসান নতুন নির্বাচিত সভাপতিসহ সবাইকে অভিনন্দন জানান। পোশাক খাতের উন্নয়নে একত্রে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিজিএমইএর নতুন ভবনকে কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে নতুন পর্ষদের কাছে অনুরোধ করেন তিনি।

সাবেক সভাপতির মধ্যে আনিসুর রহমান সিনহা বলেন, এ ব্যবসার শুরুতে অনেকে তাদের ‘দর্জি’ বলত। এটি আসলেই একটি চ্যালেঞ্জিং ব্যবসা। স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য প্রশাসককে ধন্যবাদ দিয়ে সাবেক সভাপতি ড. রুবানা হক বলেন, নতুন পর্ষদের কাছে প্রত্যাশা অনেক। অন্যদের মধ্যে সাবেক সভাপতি এসএম ফজলুল হক, রফিকুল ইসলাম বক্তব্য দেন।

নতুন পর্ষদের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে প্রশাসক ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বলেন, নানা অনিশ্চয়তার মধ্যে এ খাতের স্থিতিশীলতা ধরে রাখা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জের ছিল। তবে খাতসংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতায় থাকায় একটি নিরপেক্ষ এবং স্বচ্ছ নির্বাচন করা সম্ভব হয়েছে। এ খাতের রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ডলারের মাইলফলক অর্জনে সবাইকে কাজ করার অনুরোধ জানান তিনি।

 

 

untitled-11-1750099642

বাড়তি করের চাপে পোলট্রি শিল্প

অতিমারি করোনার যে চোট পোলট্রি খাতে লেগেছিল, তা সারাতে পারেননি উদ্যোক্তারা। এরপর একের পর এক বেড়েছে পোলট্রি উপকরণের দাম। খুঁড়িয়ে চলা খাতটির এ অবস্থায় প্রস্তাবিত বাজেটে পোলট্রি শিল্পের ওপর করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এ খাতের প্রতিষ্ঠানের টার্নওভার কর শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১ শতাংশ করা হয়েছে। অপরদিকে করপোরেট কর ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে।

উদ্যোক্তারা বলছেন, এ খাতের ওপর বাড়তি করের কারণে সস্তা ও সহজলভ্য প্রোটিনের উৎস হিসেবে পরিচিত ব্রয়লার মুরগির ডিম ও মাংসের দাম বেড়ে যেতে পারে। শেষ পর্যন্ত তা ভোক্তার ওপর চাপ তৈরি করবে। দেশের খাদ্য নিরাপত্তার প্রয়োজনে তারা টার্নওভার কর কমিয়ে শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ এবং করপোরেট কর ২০ শতাংশে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছেন।

ফিড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ফিআব) সভাপতি এবং বিপিআইসিসির আহ্বায়ক শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, টার্নওভার কর বৃদ্ধির ফলে উৎপাদন খরচ বাড়বে, যা আধুনিকায়ন ও খরচ কমানোর প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্ত করবে। যেখানে পোলট্রি উদ্যোক্তারা সর্বোচ্চ ২ থেকে ৩ শতাংশ লাভে পণ্য বিক্রি করেন, সেখানে এত বেশি হার আরোপ কোনোভাবেই যৌক্তিক নয়।

তিনি আরও বলেন, কোম্পানিগুলোর মোট করের পরিমাণ ৩৫ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত দাঁড়াবে, যা ব্যবসায় টিকে থাকা কঠিন করে তুলবে। এতে উদ্যোক্তারা ঝুঁকির মুখে পড়বেন এবং সাশ্রয়ী দামে ডিম ও মাংস বাজারে সরবরাহ করা কঠিন হয়ে পড়বে। তারা সরকারের কাছে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার অনুরোধ জানাচ্ছেন।

ওয়ার্ল্ডস পোলট্রি সায়েন্স অ্যাসোসিয়েশন-বাংলাদেশ শাখার (ওয়াপসা-বাংলাদেশ) সভাপতি মসিউর রহমান বলেন, ‘মাংস ও ডিমের দাম দীর্ঘমেয়াদে সহনীয় রাখতে আমরা কাজ করছি। অথচ আমরা যখন এ খাতের আধুনিকায়নের জন্য মেশিনারিজ আনছি, তখন আমাদের ব্যাপকহারে আমদানি শুল্ক দিতে হচ্ছে। এখন আমাদের করপোরেট কর প্রায় দ্বিগুণ করা হলো। আমরা দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতার জন্য নির্দিষ্ট সময়ের জন্য করমুক্ত খাত হিসেবে পোলট্রি খাতকে করমুক্ত রাখার দাবি করছি। কারণ আমরা নিম্ন আয়ের মানুষের পুষ্টির জন্য ডিম ও মাংসের ভোগ বাড়াতে চাইছি।’

ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সহসভাপতি এহতেশাম বি শাহজাহান বলেন, মাছের উৎপাদন কমে যাওয়ায় মুরগি এখন সবচেয়ে সাশ্রয়ী প্রোটিনের উৎস। অথচ দেশের ২০ থেকে ২৫ শতাংশ লেয়ার খামার ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। এখন উৎপাদন বাড়ানোর পথে না গিয়ে বরং চাপে রাখা হলে, ফল ভোক্তার ওপরই পড়বে। প্রস্তাবিত বাজেটে করপোরেট কর ২৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা হয়েছে। অথচ ২০১৫ সাল থেকে ১৫ শতাংশ ছিল। ২০১৫ সালের আগ পর্যন্ত কর ছিল।

ব্রিডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (বিএবি) সভাপতি মাহাবুবুর রহমান বলেন, কর আদায়ে আগে থেকেই এক ধরনের জটিলতা রয়েছে। কোম্পানির লাভ থেকে কর নেওয়ার কথা। যেখানে লোকসান হচ্ছে, সেখানে ছাড় দেওয়া হচ্ছে না। টার্গেট করে এ খাত থেকে রেভিনিউ বাড়ানোর চিন্তা করা হলে একটা সংকট তৈরি হবে।

উদ্যোক্তারা আরও জানিয়েছেন, ফিড উৎপাদনের কাঁচামাল আমদানিতে বর্তমানে ভুট্টায় ২ শতাংশ এবং সয়াবিন মিলে ৫ শতাংশ পর্যন্ত আগাম কর নেওয়া হচ্ছে। আগাম কর ফেরত দেওয়ার কথা থাকলেও জটিলতার কারণে তা আটকে থাকে। আগাম কর কমিয়ে আনার জন্য তারা দাবি জানিয়ে আসছেন।

উদ্যোক্তারা সরকারকে সতর্ক করে বলেন, পোলট্রি খাত দেশের খাদ্য নিরাপত্তার অন্যতম স্তম্ভ। এই খাত চাপে পড়লে জনগণের প্রোটিন গ্রহণের সক্ষমতা কমে যাবে এবং দীর্ঘমেয়াদে স্বাস্থ্য খাতে আরও খরচ বাড়বে। তাই বাজেটে পোলট্রি খাতের জন্য করনীতি পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান তারা।

salehuddin-1750150261

যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করছে সরকার, এখনই বাড়ছে না জ্বালানি তেলের দাম: অর্থ উপদেষ্টা

ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে জানিয়ে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‌‘জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর বিষয়ে আরও অপেক্ষা করব। আপাতত পর্যবেক্ষণ করছি, যুদ্ধটা যদি বেশি দিন চলে তখন আমাদের ওপর একটা প্রভাব পড়বে।’

আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি ও সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠক শেষে ইরান-ইসরায়েলের চলমান সংঘাতে আমাদের দেশের জ্বালানি তেলের দামে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা- সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধটা পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা দেখেছি ইতোমধ্যে কিছুটা দাম বেড়েছে। তবে যেগুলোতে আমরা অর্ডার করেছি সেগুলোতে প্রভাব ফেলে নাই।’

তিনি বলেন, ‘আমরা পর্যবেক্ষণ করছি গ্যাস, এলএনজির দাম যদি বেড়ে যায়, তাহলে আমরা বিবেচনায় নেবো। আজকে যে এলএনজি আমদানির অনুমোদন দিয়েছি, সেটা পুরোনো দামেই কোড করেছে। আমাদের ভাগ্য ভালো যে আমরা আগের দামেই পাবো।’

আপাতত আমাদের বাণিজ্য ক্ষেত্রে কোনো সমস্যা কী নেই- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘না না, আপাতত বাণিজ্যে কোনো প্রভাব পড়বে না।’

বিশেষ কোনো প্রস্তুতি নিয়ে রাখছেন কিনা জানতে চাইলে উপদেষ্টা বলেন, ‘বিশেষ প্রস্তুতি বলতে আজকে আমরা যে এলএনজি, সার আনার প্রস্তাব অনুমোদন দিলাম সেটা পুরোনো দামে। ভবিষ্যতে যখন নতুন কোনো কিছু আনব তখন হয়তো কিছুটা ইফেক্ট করবে।’

যুদ্ধ যদি দীর্ঘায়িত হয় তাহলে বিকল্প কিছু চিন্তা করছেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে অর্থ উপদেষ্টা বলেন, ‘বিকল্প চিন্তা বলতে অবশ্যই জ্বালানি মন্ত্রণালয় করছে। যেহেতু আমরা এলএনজির ওপর নির্ভর করি বেশি। যুদ্ধতে শুধু জ্বালানি না, সার, জাহাজ চলাচলেও প্রভাব পড়বে। হরমুজ প্রণালি দিয়ে জাহাজ আসে, সেখানে প্রভাব পড়তে পারে। মনে হয়, যুদ্ধটা বেশি দিন চলবে না।’

 

irib-1750148150

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে ইসরায়েলি হামলা, নিহত বেড়ে ৩

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন আইআরআইবি ভবনে ইসরায়েলের হামলায় মোট তিন কর্মী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। খবর আল–জাজিরা।

মঙ্গলবার আইআরআইবি এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। আইআরআইবি জানায়, হামলায় তিন কর্মী নিহত হয়েছেন।

নিহত তিনজনের মধ্যে দুজনের নাম-পরিচয় প্রকাশ করেছে ইরানের সরকারি সংবাদ সংস্থা আইআরএনএ।

তারা হলেন— নিমা রেজবপুর ও মাসুমেহ আজিমি। নিমা রেজবপুর ছিলেন আইআরআইবির বার্তা সম্পাদক। আর আজিমি ছিলেন আইআরআইবির সচিবালয় শাখার একজন কর্মী।

এর আগে গতকাল সোমবার ইসরায়েলি বাহিনী ইরানের রাজধানী তেহরানে অবস্থিত আইআরআইবির সদর দপ্তরে হামলা চালায়।

এদিন হামলার জেরে আইআরআইবির সরাসরি সম্প্রচার বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ পর আবার সম্প্রচার কার্যক্রম শুরু হয়।

এই হামলার কিছুক্ষণ আগে ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ও রেডিও ‘অদৃশ্য হতে যাচ্ছে’ বলে হুমকি দিয়েছিলেন ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ।

কাৎজের বিবৃতির বরাত দিয়ে বিবিসির খবরে বলা হয়, ইরানের প্রচারণা ও উসকানির মেগাফোন ‘অদৃশ্য হতে যাচ্ছে’।

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন ভবনে হামলার কথা স্বীকার করে ইসরায়েল কাৎজ এক বিবৃতিতে বলেন, তেহরানের স্থানীয় বাসিন্দাদের সরে যেতে বলার পরে ওই হামলাটি চালানো হয়েছে। ইরানের স্বৈরশাসক যেখানেই থাকুন না কেন, তাকে আঘাত করা হবে।

20-muslim-country-1750151140

ইরানে ইসরায়েলের হামলার নিন্দা জানাল মিশরসহ ২১ মুসলিম দেশ

ইরানে ইসরায়েলি হামলার নিন্দা জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র মিশরসহ ২১টি মুসলিম দেশ। নিন্দা জানানোর পাশাপাশি উত্তেজনা হ্রাস এবং পরমাণু প্রকল্প বন্ধেরও আহ্বান জানিয়েছে দেশগুলো।

মঙ্গলবার মিশরের সরকারি বার্তা সংস্থা (মেনা) এর বরাতে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও সিএনএন।

চিঠিতে স্বাক্ষরকারী দেশগুলো হলো- মিশর, আলজেরিয়া, বাহরাইন, ব্রুনেই, চাদ, কমোরোস, জিবুতি, গাম্বিয়া, ইরাক, জর্ডান, কুয়েত, লিবিয়া, মৌরিতানিয়া, ওমান, পাকিস্তান, কাতার, সৌদি আরব, সুদান, সোমালিয়া, তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত।

দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা ওই বিবৃতিতে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

খোলা চিঠিতে বলা হয়েছে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে যে সংঘাত শুরু হয়েছে— তা পুরো মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়ার সমূহ আশঙ্কা রয়েছে এবং এখন জরুরিভিত্তিতে যুদ্ধবিরতি প্রয়োজন। তারা চান, মধ্যপ্রাচ্য যেন পরমাণু অস্ত্রমুক্ত থাকে এবং এই অঞ্চলের সব রাষ্ট্র যেন জাতিসংঘের পরমাণু প্রকল্প বিষয়ক চুক্তি নন-প্রোলিফারেশন অব নিউক্লিয়ার উইপন বা এনপিটিতে স্বাক্ষর করে।

বিবৃতিতে দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা রাষ্ট্রগুলোর সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং সদ্ভাবপূর্ণ প্রতিবেশী সম্পর্কের নীতিমালা সম্মান করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা সব পক্ষকে শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির আহ্বান জানান।

তারা আরও বলেন, “মধ্যপ্রাচ্যকে পরমাণু ও অন্যান্য গণবিধ্বংসী অস্ত্রমুক্ত অঞ্চল হিসেবে গড়ে তোলা জরুরি।” এ লক্ষ্যে তারা পরমাণু অস্ত্র বিস্তার রোধ সংক্রান্ত চুক্তি (এনপিটি)-তে যোগদানের জন্য সব দেশের প্রতি আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, ইসরায়েল এখনও এনপিটি চুক্তির সদস্য নয়। এই আন্তর্জাতিক চুক্তির মূল উদ্দেশ্য হলো বিশ্বব্যাপী পরমাণু অস্ত্রের বিস্তার রোধ করা।

বিবৃতিতে দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা জোর দিয়ে বলেন, এ সংঘাতের সমাধান কেবল কূটনৈতিক পথেই সম্ভব—সামরিক উপায়ে নয়।