চলতি বছরের মার্চে ভিসা পেয়েও মহামারির কারণে সৌদি আরবে যেতে না পারা প্রায় ২৫ হাজার জনকে নতুন করে ভিসা নিতে হবে বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন।
ঢাকায় ছয় দেশের দূতাবাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বুধবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এতথ্য জানান তিনি।
মন্ত্রী বলেন, “চাকরিতে এসে এখানে আটকা পড়েছেন, তাদেরকে ভিসাটা রিনিউ করতে হচ্ছে। মার্চের সময় যারা নতুন ভিসা নিয়েছিলেন, যেতে পারে নাই, এগুলো ক্যানসেল করে রিইস্যু করবে, ২৫ হাজারের মত।
“তাদের মিশনে মাত্র ৭ জন লোক কাজ করে। সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে, তবে সবাই যাবে। সবগুলো রিইস্যু করতে হবে, একটু সময়সাপেক্ষ ব্যাপার।”
ফ্লাইটের টিকেট সংকট ও ভিসা রিইস্যু নিয়ে প্রবাসীদের বিক্ষোভ এবং এয়ারলাইন্সগুলোর কাউন্টারের সামনে তাদের জটলার মধ্যে দূতাবাসের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এই বৈঠকে বসে সরকার।
সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, মালয়েশিয়া ও ইরাকের রাষ্ট্রদূত কিংবা তাদের প্রতিনিধি বৈঠকে অংশ নেন।
সৌদ প্রবাসীদের দুর্ভোগ লাঘব করতে এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যের দেশটিতে ২০টি চালুর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে সাংবাদিকদের জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
তিনি বলেন, “কালকে (১ অক্টোবর) থেকে ২০টা ফ্লাইট যাবে। সৌদিয়া ১০টা, বিমান বাংলাদেশের ১০টা। তাতে আশা করি, অনেক লোক যেতে পারবে।”
চলতি সপ্তাহে সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের ৪টি বাণিজ্যিক ফ্লাইটের সঙ্গে বিমানের দুটি বিশেষ ফ্লাইট চলে সৌদি প্রবাসীদের নেওয়ার জন্য। অন্যদিকে, অনুমতি মেলায় ১ অক্টোবর থেকে বাণিজ্যিক ফ্লাইট চালুর সিদ্ধান্ত নেয় বিমান বাংলাদেশ।
সৌদি আরবের সঙ্গে ফ্লাইট চালুর পর এরমধ্যে সাড়ে পাঁচ থেকে ছয় হাজার প্রবাসী যেতে পেরেছেন বলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান।
করোনাভাইরাস মহামারিকালে সৌদি আরব প্রবাসী যারা দেশে এসেছিলেন, দেশটির সরকার বিমান চলাচল পুনরায় শুরু করলেও বাংলাদেশ থেকে যাওয়ায় দেখা দেয় বিপত্তি।
সৌদি আরবের অনুমতি না মেলায় সেদেশে নিয়মিত বাণিজ্যিক ফ্লাইট পুনরায় চালু করতে পারেনি বিমান। ফলে সৌদি আরবে কর্মরত অনেক বাংলাদেশি বিমানের টিকেট কেটে রেখেও যেতে পারছিলেন না। অন্যদিকে ফ্লাইট কম থাকায় সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্সও এত যাত্রীর চাপ নিতে পারছিল না।
এই পরিস্থিতিতে সৌদি প্রবাসী কর্মীরা নামেন বিক্ষোভে। তারা বিমান ও সৌদি অ্যারাবিয়ান এয়ারলাইন্স অফিসের সামনে দু’দিন বিক্ষোভের পর বুধবার প্রবাসীকল্যাণ ভবনের সামনেও বিক্ষোভ করেন।
পরবর্তীতে আটকেপড়াদের ভিসার মেয়াদ এবং ২৪ দিনের জন্য ইকামার মেয়াদ বাড়ানোর ঘোষণা আসে সরকারের পক্ষ থেকে। এরপর তাদের বিক্ষোভ থামলেও নিয়োগকর্তার ক্লিয়ারেন্স না পাওয়ার কারণে ভিসা রিনিউ করতে পারছেন না বলে অভিযোগ করে আসছেন আটকেপড়া অনেক প্রবাসী।
সেবিষয়ে এক প্রশ্নে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, “যে চাকরি দেবে সে যদি না দেয়, তাহলে তো যেতে পারবে না। তারা লোক না নিলে আপনি কী করতে পারেন? এজন্য রাস্তায় নামার কোনো কারণ নেই।”
তিনি বলেন, “তাদের উচিত অন্য চাকরি খোঁজা। নতুন লোকওতো চাকরি পাচ্ছে। তাহলে অসুবিধাটা কোথায়। অনেকে ক্লিয়ারেন্স পাচ্ছে, কেউ কেউ পাচ্ছে না। যে সাড়ে ৫ থেকে ৬ হাজার জন গিয়েছে কয়েকদিনের মধ্যে, তারাতো ক্লিয়ারেন্স নিয়েই গিয়েছে।