অবশেষে ৮৫ বছরের বয়োবৃদ্ধকে হাসপাতালে ভর্তি করলেন নড়াইল জেলা প্রশাসক

অবশেষে ৮৫ বছরের বয়োবৃদ্ধ মায়া রানী কুন্ডুকে চিত্রা নদীর পাড় থেকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছেন জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা। এছাড়া মায়া রানীর সন্তানেরা মায়ের খোঁজখবর নিতে হাসপাতালে ছুটে এসেছেন। শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নড়াইল সদর হাসপাতালে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা যায়।

এর আগে সন্তানদের কাছ থেকে বিতাড়িত হয়ে স্বামীহারা বয়োবৃদ্ধ মায়া রানী নড়াইল শহরের কুড়িগ্রাম এলাকায় চিত্রা নদীর পাড়ে এস এম সুলতান স্মৃতিসংগ্রহশালার পাশে দ্বিতলা নৌকার নিচে আশ্রয় নেন। এখানে প্রায় ১২দিন কেটে যাওয়ার পর শুক্রবার (২৫ সেপ্টেম্বর) স্থানীয় লোকজন সাংবাদিকদের জানান।

সংবাদকর্মীরা বিষয়টি নড়াইল জেলা প্রশাসককে জানালে তিনি ওইদিন (শুক্রবার) সন্ধ্যায় মায়া রানীকে হাসপাতালে ভর্তি করেন এবং তার (মায়া রানী) সন্তানদের সাথে কথা বলেন।

এদিকে শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বয়োবৃদ্ধ মায়া রানীকে হাসপাতালে দেখতে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, কোনো সন্তানই এভাবে তার বাবা-মাকে বাইরে ফেলে রাখতে পারেন না। আমরা সেই বিষয়টি আইনগত ভাবে দেখব। মায়া রানীর মতো আর কোনো ঘটনা যেন না ঘটে, সেদিকে সবার লক্ষ্য রাখতে হবে।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নড়াইল সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডাক্তার মশিউর রহমান বাবু, হাসপাতালের সমাজসেবা কর্মকর্তা তমা রায়সহ অনেকে।

ডাক্তার মশিউর রহমান বাবু জানান, মায়া রানীর বার্ধক্যজনিত সমস্যা ছাড়া তেমন কোনো সমস্যা নেই। তাই আগামি দু’দিন হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেয়া হবে।

অন্যদিকে জেলা প্রশাসনের হস্তক্ষেপের পর নড়াইল শহরের কুড়িগ্রাম এলাকার বাসিন্দা মায়া রানীর বড় ছেলে দেব কুন্ডু (৫০) ও তার স্ত্রী শনিবার হাসপাতালে ছুটে আসেন। এ সময় তারা জেলা প্রশাসককে প্রতিশ্রুতি দেন, মাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নেয়ার। মায়ের প্রতি আর কোনো অবহেলা করবেন না বলেও অঙ্গীকার করেন। তবে মায়া রানীর ছোট ছেলে উত্তম কুন্ডুর (৪০) এখনো দেখা মেলেনি। উত্তম নড়াইলের বাইরে থাকেন বলে জানা গেছে।

পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, কয়েক বছর ধরে দেব কুন্ডু তার মা মায়া রানীকে দেখাশোনা করছিলেন। এরপর প্রায় দুই বছর আগে মায়ের কাছ থেকে পাঁচ শতক বসতি জমি লিখে নেয়ার পর তার (মায়া রানী) সাথে বাজে ব্যবহার শুরু করেন।

প্রায় দেড় বছর আগে থেকে মায়ের ভরণপোষন দিতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বড় ছেলে ও তার স্ত্রী মায়া রানী কুন্ডুকে বাড়ি থেকে বের করে দেন। বৃদ্ধা মায়া রানী আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশিসহ এ-বাড়ি ও-বাড়িতে দুবেলা, দুমুঠো খাবার খেয়ে কোনো রকম জীবনযাপন করছিলেন।

তবে গত ১২দিন ধরে কারো বাড়িতে আশ্রয় না পেয়ে বরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতান কমপ্লেক্স সংলগ্ন চিত্রা নদীর পাড়ে রোদ-বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দ্বিতলা নৌকার নিচে আশ্রয় নেন তিনি।

If you like the post, share it and give others a chance to read it.

ফরহাদ খান

nogor24 বাংলাদেশের জনপ্রিয় একটি ব্লগসাইট। এই সাইটের লক্ষ্য হল বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে সহজে বোধগম্য এবং সঠিক খবর এবং তথ্য প্রদান করা।