মোঃ বেলায়েত হোসেন ( নাটোর) জেলা প্রতিনিধিঃ
কুরবানি ঈদে গরু খামারীদের সঠিক মৃল্য পায় সে দিকে নজর দিতে হবে – অনলাইন ডিজিটাল পশু হাট প্রতিটা জেলা সঠিক ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। কেউ যেনে হয়রানী স্বীকার না হয়।
গ্রামের মানুষ আগে পশুপালন করত নিজেদের খাবারের জন্য। কিন্তু সেই অবস্থা এখন আর নেই। সাম্প্রতিক সময়ে কৃষির উপখাত হিসেবে গরুসহ পশুপালনের হার বাড়ছে। ব্যক্তি উদ্যোগের বাইরে এখন বাণিজ্যিক ভাবে ও গরুপালন হচ্ছে। মাংসের চাহিদা আমরা এখন নিজেরাই পূরণ করছি।
দিন দিন দেশে ফার্মের সংখ্যা বাড়ছে। চাহিদাও তৈরি হচ্ছে। পশুপালনে বড় ইতিবাচক দিক হলো না’রীরাও পশুপালনে এগিয়ে আসছেন। নারী উদ্যোক্তারা ফার্ম দিয়ে বাণিজ্যিক ভাবে পশুপালন করে বিক্রিয় করছেন। আগে শুধু ব্যক্তি উদ্যোগে গরুর খামার দেখা যেত। এখন বাণিজ্যিক ভাবেও দেশের সবখানে ফার্ম দেখা যাচ্ছে।
এতে একদিকে যেমন গ্রামীণ অর্থনীতি আরো চাঙ্গা হচ্ছে; তেমনি, উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় শহরও চাঙ্গা হচ্ছে। এখন এমনও দেখা যাচ্ছে, পশুপালনের হার বেশি হয়ে যাচ্ছে। রপ্তানিও শুরু হচ্ছে।
তবে একটা বিষয় মনে রাখতে হবে, ব্যক্তি উদ্যোগের পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে ও পশুপালনে উৎসাহিত করা হচ্ছে। সরকারের ‘আমার বাড়ি, আমার খামার’ প্রকল্প, পল্লী কর্মসহায়ক ফাউন্ডেশন বা পিকেএসএফের সমৃদ্ধি কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামের মানুষদের গরুসহ অন্যান্য পশুপালনে সহযোগিতা করা হচ্ছে।
গ্রামীণ অর্থনীতিতে দরিদ্র মানুষদের জন্য এই সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। গ্রামীণ নারীদের দারিদ্র্য বিমোচন ও আয় সৃজনে গরুপালন কার্যকর ভূমিকা রাখ’ছে। দেশে অনেক গরু’র খামার তৈরি হয়েছে। তা ছাড়া গ’রুর খামারের বর্জ্য থেকে জৈব সার ও বায়োগ্যাস দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
গরুকে খাওয়ানোর জন্য ফিড শিল্পের বিকাশ ঘটছে। ব্যাংকিং ঋণ, বেকার দের কর্মসংস্থান ব্যাংক থে’কে লোন দেওয়া হচ্ছে। সব মিলিয়ে একটি শিল্পকে ঘিরে নানা ধরনের চা’হিদা তৈরি হয়েছে। এক সময় দেশে ভারতীয় গরুর ওপর নির্ভরতা বেশি ছিল। ভারত থেকে গরু আমদানি বন্ধ হওয়ায় আমাদের এখানে প্রচুর খামার তৈরি হলো।
অন্যদিকে চাহিদাও তৈরি হলো। ফলে অবৈধ ভাবে যারা গরু আনছে, তারা সুবিধা করতে পারছে না। কারণ দেশে প্রচুর গরুপালন হচ্ছে। যারা গরুপালন করছে, তারা গরুর ন্যায্য দামও পাচ্ছে। ভারত থেকে গরু আমদানি নিষিদ্ধের পর উত্তরবঙ্গে প্রচুর নারী উদ্যোক্তা তৈরি হয়েছে। তাঁরা গরুপালন কর’ছে বাণিজ্যিকভাবে।
পশুপালন বেশি হওয়ায় দুধের উৎপাদনও বেড়েছে। তা ছাড়া সারা বছরই মাংস পাওয়া যাচ্ছে। এসবের মাধ্যমে গ্রামীণ অর্থনীতি এখন বেশ চাঙ্গা। মাংসের চাহিদা বাড়ার সঙ্গে স’ঙ্গে চা’মড়াজাত পণ্যের চাহিদাও বাড়ছে। একটার সঙ্গে আরেকটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। চামড়াশিল্পে নতুন নতুন পণ্য তৈরি হচ্ছে।
সে জন্য চামড়াজাত পণ্যের রপ্তানি পাঁচ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার স্বপ্ন দেখছে সরকার। যেটি এখন এক বিলিয়ন ডলারে আছে। তবে কোরবানির সময় চামড়ার দাম কমে যাওয়া অত্যন্ত দুঃখজনক। সাধারণ মানুষ কোরবা’নির সময় তার চামড়ার দাম পান না। এতে প্রচুর চামড়ার অপচয় হচ্ছে।
মানুষ দাম না পেয়ে চামড়া ফেলে দিচ্ছেন। মধ্যস্বত্ব’ভোগীরা এই সুযোগ নিচ্ছে। চামড়া সঠিকভাবে সংগ্রহ না হলে এর মূল্যও কমে যায়। তাই অবশ্যই মধ্যস্ব’ত্বভোগীদের অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে। যাঁরা সত্যিকার ব্যবসায় করেন, তাঁদের ব্যবসার সুযোগ করে দিতে হবে। এটি করতে না পারলে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। মধ্যস্বত্ব’ভোগীদের লাগাম টেনে ধরতে হবে সরকারকে।
মোঃ বেলায়েত হোসেন ( এলএসপি)
সিংড়া উপজেলা প্রাণীসম্পদ সিংড়া নাটোর।