রাকিব হাসানঃ
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ঢাকাসহ সারাদেশেই এখন কোভিড-১৯ ভাইরাসের দখলে। ঢাকার পরিস্থিতি ভয়াবহ ও বিপজ্জনক। করোনার অভিঘাতে দেশব্যাপী প্রায়-দুর্ভিক্ষাবস্থা বিরাজ করছে। অর্থনীতির চাকা স্তিমিত, আমদানির পাশাপাশি রপ্তানি আরও আশঙ্কাজনক হারে কমছে, ধ্বসে গেছে রেমিটেন্স। করোনার কারণে চাহিদা ও ভোগ হ্রাস পাওয়ায় কর্মহীন হয়ে পড়েছে জনগোষ্ঠীর একটি বিশাল অংশ। মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন আয়ের মানুষদের চোখে সর্ষে ফুল দেখার দশা। এর ওপর ফ্যাসিবাদের অবয়ব চূড়ান্ত রূপ ধারণ করেছে।’
আজ (২২ জুন) নয়াপল্টনে বিএনপি’র কেন্দ্রীয় কার্যালয় এক ভিডিও কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, সরকার চলছে হুকুমবাদের মনোভাব ও বাধ্যকরণের নীতির বাস্তবায়নের মাধ্যমে। তাদের আর একটি প্রধান নীতি হচ্ছে জনগণকে বশ মানাতে বলপ্রয়োগ করা। সরকারের অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে গ্রামে গ্রামে নীরবে ছড়াচ্ছে করোনাভাইরাস।
তিনি আরও বলেন, টাকা পাচারের সঙ্গে ক্ষমতাসীনদের রুই-কাতলারা ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এরা ক্ষমতা দখল করে বারো বছরের রাজত্বে অসংখ্য পাপুল, সম্রাট, খালেদ, শিকদার ভ্রাতৃদ্বয়ের জন্ম দিয়েছে। ক্যাসিনো থেকে শুরু করে মানবপাচারের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা তাদের পকেটে ঢুকেছে। রহস্যজনকভাবে দেশ থেকে উধাও হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আটশো কোটি টাকাও।
বিএনপির এর নেতা আরো বলেন, সরকার তাদের সৃষ্ট শুন্যভান্ডার পূরণ করতে মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে নিম্ন আয়ের মানুষের গলায় ছুরি বসিয়ে টাকা আদায় করছে। করোনা মহামারির এই প্রলয়ংকারী দুর্যোগের সময় সুষ্ঠু ভোটে নির্বাচিত দায়িত্বশীল সরকার থাকলে বিদ্যুৎ বিল মওকুফ, বাড়ি ভাড়ার বিষয়ে সহায়তা করা, বিনামূল্যে করোনা চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে সহায়তা করত। কিন্তু নিশিরাতের সরকার সেটি না করে অবিশ্বাস্য ভুতুড়ে বিদ্যুৎ বিল দেশবাসীর ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে। সেই বিল জুনের মধ্যে পরিশোধ করা না হলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার হুমকিও দেয়া হচ্ছে। বিদ্যুৎ-গ্যাসের অস্বাভাবিক বিল আদায়ে দুর্নীতিসংশ্লিষ্ট একটি অমানবিক দুষ্টুচক্র কাজ করছে।
রিজভী বলেন, বর্তমান দুর্নীতিবান্ধব সরকার দেশের ভঙ্গুর অর্থনীতি, করোনার আঘাতে দেশের বেহাল দশা ও প্রায়-দুর্ভিক্ষাবস্থা ঠেকাতে ‘কোড অব সাইলেন্স’ প্রয়োগ করছে। এজন্য দমনমূলক আইনের যথেচ্ছ ব্যবহারের দ্বারা র্যাব-পুলিশ ও গোয়েন্দা মেশিনারি দিয়ে মানুষের মুখ বন্ধ রাখা হচ্ছে। অসহায় মানুষকে নীরবে সইতে হচ্ছে ক্ষুধা ও জুলুমের যন্ত্রণা। অসম্ভব হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন-যাপন।