ফরহাদ খান, নড়াইলঃ
আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কাশিপুর ইউনিয়নের গন্ডব গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় আপন চাচা-ভাতিজাসহ তিনজন নিহতের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতারপূর্বক শাস্তির দাবিতে ঝাড়–মিছিল ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুন) দুপুরে নড়াইল সদর হাসপাতাল চত্বর থেকে লাশ ঘাড়ে নিয়ে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে এসে শেষ হয়।
এসব কর্মসূচীতে নিহতদের পরিবার ও আত্মীয়-স্বজনসহ গন্ডব এবং চালিঘাট গ্রামের প্রায় এক হাজার নারী-পুরুষ অংশগ্রহণ করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান, মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা, আব্দুল আলিম প্রমুখ।
তিনজনকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় জেলা পরিষদ সদস্য গন্ডব গ্রামের সুলতান মাহমুদ বিপ্লব, শেখ নাজমুল আলম, ইমরান কাজী, সাহেব শিকদার, আশরাফ আলী, ছলেমান মেম্বারসহ দোষীদের গ্রেফতার এবং ফাঁসির দাবি করেন নিহতদের পরিবারের সদস্যরা।
এ সময় তারা প্রতিপক্ষের শেখ নাজমুল আলম, সুলতান মাহমুদ বিপ্লবসহ দোষীদের গ্রেফতারপূর্বক যথাযথ শাস্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
এ ঘটনায় জেলা প্রশাসক আনজুমান আরার কাছে স্মারকলিপি দেয়া হয়। এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার ওসি সৈয়দ আশিকুর রহমান বলেন, তিনজনকে হত্যাকান্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১২জনকে আটক করা হয়েছে।
এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত মামলা দায়ের হয়নি। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত বুধবার (১০ জুন) দুপুরে লোহাগড়ার গন্ডব গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় আপন চাচা-ভাতিজাসহ একই গ্রুপের তিনজন নিহত হন।
এদের কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ হামলায় অন্তত ১৫ জন আহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন-চাচা মোকতার মোল্যা (৬০) ও ভাতিজা আমিনুর রহমান হাবিল (৫৫) এবং রফিকুল ইসলাম (৩০)। এদের সবার বাড়ি গন্ডব গ্রামে। এরা কাশিপুর ইউনিয়নের গন্ডব গ্রামের সাবেক মেম্বার মিরাজ মোল্যার সমর্থক।
ওই গ্রামের বাসিন্দা জেলা পরিষদ সদস্য সুলতান মাহমুদ বিপ্লব গ্রুপের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে মিরাজ মোল্যা গ্রুপের দ্বন্দ্ব সংঘাত চলে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত বুধবার দুপুরে মিরাজ মোল্যা গ্রুপের খালিদ বাজারে যাওয়ার পথে গন্ডব গ্রামের বটতলায় তাকে হাতুড়িপেটাসহ মারধর করে প্রতিপক্ষ বিপ্লব গ্রুপের লোকজন।
মিরাজ মোল্যা গ্রুপেরলোকজন এ ঘটনার প্রতিবাদ করলে প্রতিপক্ষ বিপ্লব গ্রুপের লোকজন তাদের (মিরাজ) লোকজনের ওপর ধারালো অস্ত্র, লাঠি, ঢাল-সড়কিসহ হামলা চালায় বলে অভিযোগ রয়েছে।
এ হামলায় চাচা মোকতার মোল্যা, ভাতিজা আমিনুর রহমান হাবিল ও রফিকুল ইসলামসহ মিরাজ মোল্যা গ্রুপের অন্তত ১৫জন আহত হন। আহতদের নড়াইল সদর হাসপাতালে আনা হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মোকতার মোল্যা ও আমিনুর রহমান হাবিলকে মৃত ঘোষণা করেন।
এছাড়া গুরুতর আহত রফিকুলকে যশোর নেয়ার পথে তিনি মারা যান। আহতদের নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে, নিহতদের লাশ বৃহস্পতিবার (১১ জুন) আসর নামাজ বাদ গন্ডব গ্রামে দাফন করা হয়েছে।